Bangla Version

                                             Conjunctivitis ?





   


চোখের গোলকের সাদা অংশ এবং চোখের পাতার ভিতরের অংশ পাতলা একটি স্বচ্ছপর্দা দিয়ে ঘেরা থাকে যার নাম কনজাঙ্কটিভা (Conjunctiva) আর এর প্রদাহ বাinflammation  হলো চোখ ওঠা বা কনজাঙ্কটিভাইটিস আমাদের সমাজে এটি খুবইএকটি পরিচিত রোগ যার বহুবিধ চিকিতসা পদ্ধতি অল্পবিস্তর সবাই জানেন আমরাআশেপাশে যে কনজাঙ্কটিভাইটিস এর রোগীদের দেখে থাকি সেটা সচরাচর ভাইরাসেরআক্রমনে হয় তবে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াএলার্জী বা আঘাত পাবার কারনেও রোগ হতে পারে যেকোনো বয়সের নারী পুরুষের  রোগটি যেকোনো সময় হতে পারেতবে অপরিস্কার বা নোংরা জীবন যাপন পদ্ধতি এরোগ হতে সহায়ক ভূমিকা রাখে
চোখ ওঠা রোগের লক্ষণ সমূহঃ
-সাধারণ ভাবে চোখে চোখ লাল হওয়া।
-
চোখ খচখচ করা।
-
চোখ সামান্য ব্যথা করা।
-
চোখে পিচুটি জমা 
-
রোদে বা আলোতে তাকাতে কষ্ট হওয়া  পানি পড়া।
-
বিশেষ করে রাতে ঘুমের পর সকালে উঠলে চোখের কোণে পিচুটি বা ময়লা জমতেপারে। 
-
শিশুদের ক্ষেত্রে চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে।
-
সর্দি  চোখের চুলকানি একসঙ্গেও হতে পারে 
সাধারণ ভাবে  রোগটি ঋতু পরিবর্তনের সময় দেখা দেয়  অর্থাৎ শীত শেষে গরমযখন পড়তে থাকে সে সময় এই রোগ দেখা দেয়  একই সাথে  সময় অন্যান্য ভাইরাসঘটিত রোগ যেমন সর্দি-কাশি বা ঠান্ড জ্বর দেখা দেয়।

কনজাংকটিভাইটিস রোগ কিভাবে ছড়ায়?
সরাসরি হাতের স্পর্শফোমাইটবাতাসএমনকি হাত-মুখ ধোয়া  অজু-গোসলেরসময় পুকুরনদী বা সুইমিংপুলের পানির মাধ্যমেও জীবাণুগুলো ছড়াতে পারে।কনজাংকটিভাইটিসে আক্রান্ত চোখে আঙুল বা হাত লাগালে হাতে লেগে থাকা জীবাণুরুমালতোয়ালেগামছাটিস্যু পেপারকলমপেনসিলবইয়ের পাতাখাতাটেবিল,চেয়ারদরজার সিটকিনিকলের ট্যাপ ইত্যাদিতে লেগে থাকতে পারে। এগুলোকে তখনচিকিৎসার পরিভাষায় বলে ফোমাইট। রুমালতোয়ালেগামছাটিস্যু পেপার দিয়েআক্রান্ত চোখ মুছলেও এগুলোতে জীবাণু লেগে থাকবে। এসব ফোমাইটের মাধ্যমেওজীবাণু ছড়িয়ে যেতে পারে অন্যের চোখে। এবং এসব কারণে একজনের চোখ ওঠা রোগহলে তা মহামারি আকারে অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। শিশু বা বৃদ্ধ কেউই বাদ যায়না। তবে স্কুল বা অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অনেকে একসঙ্গে থাকে বলেতাদের একজনের কনজাংকটিভাইটিস হলে অন্যদের মধ্যে রোগটা ছড়িয়ে পড়ে খুবদ্রুত। ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে হলে চোখ ওঠার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে শুরুকরে সাত-আট দিন বা চিকিৎসা শুরু করার দু-তিন দিন পর্যন্ত  রোগ অন্যজনের মধ্যেছড়িয়ে পড়তে পারে। এটাকে বলে সংক্রমণের সময়কাল। আর ভাইরাসজনিত কারণেহলে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগে থেকে শুরু করে লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সাতথেকে ১০ দিন পর পর্যন্ত ভাইরাসগুলো অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারে। জীবাণু ঢোকারপাঁচ-সাত দিন পর চোখ ওঠার লক্ষণ প্রকাশ পায়। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়াকনজাংকটিভাইটিস যদিও তেমন কঠিন রোগ নয়সাত থেকে ১০ দিনে ভালো হয়ে যায়,তবু  রোগটি একেবারে কম কষ্টকর নয়।
প্রতিরোধের উপায়
চোখ ওঠা বা কনজাংকটিভাইটিস প্রতিরোধের উপায় আছে। সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাতধোয়া প্রতিরোধের খুব একটা ভালো উপায়। যার চোখ উঠেছেসেও যেমন ঘন ঘন হাতধোবেযার হয়নিরোগীর সংস্পর্শে আসা এমন সুস্থ লোকেরও তেমনি ঘন ঘন হাত ধুয়েনিতে হবে। রোগীর ব্যবহূত রুমালতোয়ালেগামছাটিস্যু পেপারচোখের ড্রপ,চোখের কসমেটিকস ইত্যাদি অন্যে ব্যবহার না করার মাধ্যমেও রোগটি প্রতিরোধ করাযাবে অনেকাংশে। আর রোগীর ব্যবহূত রুমালতোয়ালেগামছা ইত্যাদি ধুয়ে ফেলতেহবে তাৎক্ষণিকভাবে। টিস্যু পেপার ফেলে দিতে হবে নিরাপদ স্থানে। রোগী বা সুস্থসবারই চোখে হাত বা আঙুল না লাগানো অথবা চোখ না কচলানোএসব অভ্যাসওপ্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে বেশ। চোখ ওঠা চোখে ভুলে আঙুল দিলে বা কচলালে সঙ্গেসঙ্গেই হাত ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাতে বিভিন্ন বস্তুতে রোগজীবাণু লেগেযাওয়ার আশঙ্কা কমেকোনো বস্তুকে ফোমাইটে রূপান্তর করার আশঙ্কা কমে। আরপ্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটাও জরুরি।

চিকিৎসা:
ভাইরাস জনিত চোখ ওঠার জন্য সাধারণ ভাবে তেমন কোনো ওষুধের দরকার পড়ে না কারণ  জাতীয় চোখ ওঠা সাতদিনের মধ্যেই ভাল হয়ে যায়  তারপরও চিকিৎসককখনো কখনো  জাতীয় চোখ ওঠার জন্য এন্টিবায়োটিক ড্রপ দিয়ে থাকেন  এটা দেয়াহয় সর্তকতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে  ভাইরাস জনিত চোখের রোগের ফলে অন্য কোনোসংক্রমণ যেনো হামলা করতে না পারে সে জন্যেই এই এন্টি বায়োটিক প্রদান করা হয়  ছাড়া চোখ ওঠা ছাড়াও যদি জ্বর বা গলা ব্যাথা জাতীয় উপসর্গ থাকে তবে তার জন্যচিকিৎসক ওষুধ প্রদান করবেন   ছাড়া ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে যদি চোখ উঠেথাকে তবে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক অবশ্যই এন্টিবায়োটিক প্রদান করবেন   ছাড়াপ্রয়োজনীয় আরো ওষুধ দিবেন।
চোখ উঠলে গরম পানির সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়। চোখ ওঠার সাথে সাথেঅনেকেই চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না  কিন্তু সাতদিনের মধ্যে চোখ ওঠা না গেলেঅবশ্য চোখের ডাক্তারের কাছে যেতে হবে   ছাড়া চোখে ওঠার পর স্টেরয়েড জাতীয়কোনো ওষুধ চোখে দেয়া যাবে না  তাতে মারাত্মক কুফল দেখা দিতে পারে  আরকারো চোখ উঠলে তাকে যতোটা সম্ভব একা থাকতে দিতে হবে। আর এটি করতে হবেচোখের রোগের বিস্তার প্রতিহত করার জন্য  চোখ উঠলে কেউ কেউ শামুকের পানি সহনানা ধরণের টোটকা চিকিৎসা করেন।  জাতীয় চিকিৎষা থেকে অবশ্যই বিরতথাকতে হবে। না হলে অন্ধ হওয়ার আশংকা সহ নানা ধরণের মারাত্মক উপসর্গ দেখাদিতে পারে

No comments:

Post a Comment